রাঙ্গুনিয়ার দেড়শো বছরের প্রাচীণ বৈশাখী ও মহামুনি মেলা
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড রাজারহাটের রাজাভূবন রাজবাড়িতে সপ্তদশ শতাব্দীর চাকমা রাজার রাজবাড়ীতে দেড়শো বছরের প্রাচীণ বৈশাখী ও মহামুনি মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
পুরনো এই চাকমা রাজবাড়ীকে ঘিরে দেড়শো বছর ধরে নববর্ষের দ্বিতীয় দিন ঘটা করে পালন করে বৈশাখী ও মহামুনি মেলার আয়োজন করা হয়। তবে গত দশ বছর ধরে বৈশাখী মেলায় আয়োজন করা না হলেও এখানে আগের মতোই চাকমাদের বিজু উৎসব ও পূজা অর্চনার আয়োজন হয়ে থাকে। আর এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বসেছে বৈশাখী মেলা।
কালের বিবর্তনে বৈশাখী মেলা নামটি হারিয়ে গেলেও এখনো এটি স্থানীয়দের কাছে বৈশাখী মেলা নামেই বেশ পরিচিত। তাই দূর দূরান্ত থেকে উৎসব ও মেলা দেখতে আসেন দর্শনার্থীরা। তবে কয়েকবছর ধরে উৎসব পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে গিয়ে মেলার আড়ালে এখানে স্থানীয় কয়েকজন নেতাদের মদদে চলে আসছিল কোটি টাকার জুয়ার আসর।
তবে এই বছর স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় জুয়া বিহীন বৈশাখী মেলা উপভোগ করলো সাধারণ জনগণ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) মেলা ঘুরে দেখা যায়, বিজু উৎসবকে ঘিরে মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেছে বিভিন্ন দোকানিরা। পিঠাপুলিসহ নানা বাঁশ-বেতের শৈল্পিক ব্যবহার্য অনেক দ্রব্যাদির দোকান বসেছে। দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ মেলা ও উৎসব দেখতে এসেছে। এদিকে সকাল থেকেই পুলিশের একটি টিমকে নিরাপত্তায় কাজে টহল দিতে দেখা যায়।
মেলার আগের দিন বিকেলে উৎসব প্রাঙ্গন পরিদর্শনে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও কামরুল হাসান।
তিনি জানান, উৎসবে রাঙ্গুনিয়া ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ আসবে। কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সুজন হালদার জানান, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সেনাবাহিনী টহলের পাশাপাশি পুলিশের সতর্ক অবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে। এলাকার জনগণ সচেতনতায় জুয়া ও অশ্লীলতা বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
এদিকে প্রথমবারের মতো জুয়া বিহীন মেলা উপভোগ করায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এলাকার যুবসমাজ ও স্থানীয়রা।